শরীয়তের মৌলিক দলিল চারটি।
১.কুরআন।
২.সুন্নাহ।
৩.ইজমা।
৪.কিয়াস।
আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত এই চার মূলনীতি অনুসরণ করে। মুসলিম উম্মাহের ইজমা যে কোন যুগেই হতে পারে। সাহাবীদের ইজমা, তাবেয়ীগণের ইজমা কিংবা পরবর্তী যুগের আলেমদের ইজমাও শরীয়তের দলিল।
এই চার মূলনীতির বাইরে শরীয়তের অন্য কোন দলিল নেই। সালাফদের ব্যক্তিগত মতামত শরীয়তের পৃথক কোন দলিল নয়। বিষয়টা এমন নয় যে, সালাফদের যে কেউ যাই বলুক, সেটাই শরীয়তের দলিল হয়ে যাবে। তবে কোন বিষয়ে সালাফদের মধ্যে যদি ইজমা হয়, তাহলে সেটা শরীয়তের দলিল হবে। নতুবা এটা সাধারণ বক্তব্য হিসেবে ধর্তব্য হবে।
সালাফদের মধ্যে যারা ইজতিহাদের যোগ্য ছিলেন, তাদের কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ইজতিহাদ শরীয়তের দলিল বলে গণ্য হবে। মুজতাহিদের ইজতিহাদ সব যুগেই শরীয়তের দলিল। এটা শুধু সালাফদের সাথেই নির্দিষ্ট নয়।
সালাফদের যুগ অবশ্যই উত্তম যুগ ছিলো। এটা রাসূল স. এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। একইভাবে সালাফদের ইলম,তাকওয়া, যুহদ অবশ্যই অতুলনীয়। ইবনে রজব হাম্বলী রহ. তাদের ইলমের ফজীলতের বিষয়ে পৃথক কিতাব লিখেছেন। ফাজলু ইলমিস সালাফ আলাল খালাফ। কিন্তু তাদের প্রত্যেকের সকল বক্তব্য শরীয়তের দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে না। এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
Month: October 2016
আমি বিভিন্ন সময়ে আকিদার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লিখে থাকি। অালোচনায় অনেক ক্ষেত্রেই স্পষ্ট বলে থাকি যে, এটি তাউহীদ, এটি শিরক। এটি ইমান এবং এ বিষয়টি কুফুরী। যেমন গতকালের পোস্টে দু’টি আকিদা সম্পর্কে লিখেছিলাম, এ দু’টি বিশ্বাস জঘন্য শিরকী আকিদা।
১. আল্লাহ তায়ালা আরশে বসে আছেন।
২. আল্লাহ তায়ালা রাসূল স.কে আরশে তার সাথে বসাবেন।
আমি এখনও বলছি, বিষয় দু’টো অত্যন্ত গর্হিত শিরকী আকিদা। এখন প্রশ্ন হলো, পূর্ববর্তী কিছু আলেমের কিতাবে এই ধরণের আকিদা বিশ্বাস রয়েছে। যেমন ইবনে তাইমিয়া রহ. ও ইবনুল কাইয়্যিম রহ. এর কিতাবে। তাদেরও আগে আরও কিছু আলেমের কিতাবে এগুলো আছে। খাল্লালের আস-সুন্নাহ কিতাবে, আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদের নামে প্রসিদ্ধ আস-সুন্নাহ কিতাবে এগুলো রয়েছে। বরং কারও কারও কিতাবে এর চেয়েও জঘন্য আকিদা রয়েছে। যেমন ইবনে খোজাইমা রহ. এর কিতাবুত তাউহীদে খুবই জঘন্য কিছু আকিদা আছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদের আস-সুন্নাহ কিতাবের কথা তো বলার প্রয়োজন নেই। অনেক আকিদা মুখে আনাও সম্ভব নয়। ইবনে তাইমিয়া রহ ও তার ছাত্র ইবনুল কাইয়্যিম রহ. এর কিতাবেও এর চেয়ে জঘন্য আকিদা বিশ্বাস রয়েছে। উসমান ইবনে সাইদ আদ-দারিমির কিতাবে মারাত্মক আকিদা বিশ্বাস রয়েছে। এধরণের আরও অনেক কিতাব রয়েছে যেগুলোতে বিভিন্ন ধরণের শিরকী আকিদা রয়েছে।
মূল বিষয় হলো, যাদের কিতাবে এজাতীয় শিরকী বিষয় রয়ে গেছে, তাদের সম্পর্কে আমাদের ধারণা কী হওয়া উচিত? তাদেরকে কি আমরা মুশরিক মনে করবো? কুফুরী বিষয়ের কারণে তাদেরকে কাফের বলে দিবো?